RECENT COMMENTS

ঝড়ে পরা শিশুদের নিয়ে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম



যেসব শিশু কখনও প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হয়নি অথবা যারা প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরও বিভিন্ন কারনে ঝড়ে পড়েছে- তাদের জন্য আমরা কি করতে পেরেছি? প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি এবং ঝড়ে পড়া- এই দুই ক্যাটাগরিতে সারা বাংলাদেশে প্রায় ৩৫ লক্ষ শিশু রয়েছে। অথচ আজকের শিশুকেই বলা হয় আগামি দিনের ভবিষ্যত। তাহলে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত এসব শিশুদের ভবিষ্যত কি?
শিশুদের ভবিষ্যত ও মধ্য আয়ের বাংলাদেশ- বিষয়টি মাথায় রেথে বাংলাদেশ সরকার ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ইং সালে, বঞ্চিত এসব শিশুদের দ্বিতীয় বার লেখাপড়ায় সুযোগ দেয়ার জন্য “সেকেন্ড চান্স এডুকেশন” নামে একটি উপানুষ্ঠানিক প্রকল্প চালু করেছিল। দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের প্রায় ১,০০,০০০ শিশুর শিক্ষার সুযোগ প্রদানের উদ্দেশে সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং থেকে ২০ জুন, ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত প্রকল্পটি পরিক্ষামূলক (পাইলটিং) হিসেবে চলেছে। এ কাজে সহযোগী সংস্থা হিসেবে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ব্যাক এবং সেইভ দ্যা চিলড্রেন কাজ করছেন। এছাড়া কারিগরি সহয়াতা করেছেন সেইভ দ্যা চিলড্রেন।
এ প্রকল্পের আওতায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ৮-১৪ বছর বযসী বছর শিশুদের বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতানুযায়ী সমন্নিত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে  প্রাথমিক শিক্ষা উপযোগী গুণগত শিক্ষা অর্জন করে শিক্ষার মূল স্রোতধারায় একত্রীকরণ করা। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণি ভিত্তিক কাঙ্খিত যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে।
প্রকল্প পরিচালিত সকল শিক্ষণ শিখন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে শিশু শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে, যার স্থাপন ও পরিচালনায় স্থানীয় জনগনের সর্বাত্নক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় জনসমাজ ও সরকারি শিক্ষা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করা হতো। এ শিখন কেন্দ্রসমূহ পরবর্তীতে “উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো” আওতায় পিডিপিই-৪ এর ম্ধ্যমে অন্যান্য শিক্ষা প্রদানকারী সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
দূর্গম, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করা শিশুদের চাহিদা ভিত্তিক শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পটি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ধারায় পরিচালিত হলেও পাঠ্যপুস্তক ছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কতৃক প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তক। এছাড়া শিশুদের মৌলিক চাহিদা ও পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশের কথা মাথায় রেখে, সহশিক্ষাক্রমিক কাজ যেমন, শারীরিক কাজ, জ্ঞানচর্চামূলক কাজ, সাংস্কৃতিক কাজ ও সামাজিক কাজের শিক্ষা দেয়া হয়েছে। শ্রেণি কক্ষে বিনোদনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক উপকরন সরবারহ করা হতো।
আনন্দের বিষয় উক্ত প্রকল্পটির আশানুরুপ ও কার্যকরী ফল হওয়াতে বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পটির মেয়াদ আরো ৬ মাস বৃদ্ধি করেছেন এবং সরকারী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রকল্পটি “উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো” এর অধীনে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোন সহযোগী সংস্থার সাহায্য ছাড়াই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো আগামী ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ ইং পর্যন্ত কাজ করবেন। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো এর সহকারি পরিচালক জনাব মো: আবু নাজের বলেন, ভবিষ্যতে বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার সাহায্য নিয়ে, প্রকল্পটি ৩ বছরে ১০ লক্ষ শিশুর শিক্ষার সুযোগ সৃষ্ঠি হবে এবং এটি বাংলাদেশ সরকাররে একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প হতে পারে।

Share on Google Plus

0 comments:

Post a Comment