মার্চে একদল সাদাচামড়ার লোক বলেছিলো, বাংলাদেশে
এপ্রিল মাসে লাশের পর লাশ পরবে। এপ্রিলের শেষে বলেছিলো মে-তে লাখ লাখ লাশের স্তুপ
হয়ে যাবে! কমপক্ষে ২০ লাখ লোক মারা যাবে। স্বদেশি কিছু বুদ্ধিজীবীও তালে তাল
দিয়েছিলো। এরা পারেও বটে; এদের পারতে হয় কারণ দেশটি উন্নয়নশীল বাংলাদেশ বলে।
সাম্রাজ্যবাদিরা চাইবে না পৃথিবীর বড় মার্কেট হাত ছাড়া হোক। আপনি একবার ভাবুনতো এত
কিছুর পরেও এখনও স্বাস্থ্যখাতের কোন জোর পদক্ষেপ কেন চোঁখে পড়ছে না? এটা স্পষ্ট
যে, বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবসা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে, এবং এর দায় বর্তমান সরকার
সহ অতীতের কোন সরকারই এড়াতে পারে না। এমনকি বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিও এর দায় এড়াতে
পারে না।
যাইহোক, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো এই
সাম্রাজ্যবাদিদের সেবা করেই টিকে থাকতে হয়। আমরাও টিকে আছি এবং থাকবো; আপনার আমার
চাওয়া-পাওয়া সরকারের কিছু আসে যায় না।
তবুও এই মূহুর্তে আমাদের কিছু করণীয় আছে:-
১। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই মৃত্যু হবে;
এটা কিছু মানুষ সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। এই ধরণের মানুষকে পরিত্যাগ
করুণ।
২। ব্যক্তিগত ভাবে করোনাভাইরাসের মৃত্যু নিয়ে
আপডেট দেয়া বন্ধ করেন। আপনি প্রতিদিন মৃত্যুর যে আপডেট দেন তা দেখে অনেক মানুষ
মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। শারীরিকভাবে দূর্বল হতে থাকে ও স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা
কমতে থাকে।
৩। মানুষকে সচেতন করেন বাট বিভ্রান্ত করবেন না।
কভিড-১৯ জাস্ট সাধাধণ একটা ফ্লু। সমস্যাটা হলো ঘরে একজন আক্রান্ত হলে বাকি সবার
মাঝে ছড়িয়ে পরে। অসুস্থকে সেবা করার মত পরিবারে কেউ থাকে। সুতরাং মনোবল দৃঢ় রাখা
জরুরি।
৪। যারা পূর্ব থেকে বড় কোন রোগে আক্রান্ত আছে
তাদের প্রতি একটু বেশি যত্ন দরকার। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে যত লোকের মৃত্যু
হয়েছে তার অধিকাংশই বড় রোগে আক্রান্ত ছিলো।
৫। ভয় ও আতঙ্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহজে কোন
রোগীকে ভর্তি নিচ্ছে না, ফলে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে।
৬। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রুগী খুব সিরিয়াস না
হলে প্রচলিত ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেন। এটি খুব কার্যকর চিকিৎসা (প্রমানিত)।
মৃত্যুর উদাহরণ দেয়ার জন্য অনেকেই বিদেশের কথা
বলে থাকেন।
ভাই, আপনি থাকেন কোন দেশে নিশ্চয় বাংলাদেশে? বাস্তবতায়
ফিরে আসেন; ঢাকার কুডিল বস্তি, মিরপুরের বস্তি, জেনেভা ক্যাম্প বস্তির দিকে তাকান
আশা করি বুঝতে পারবেন। অন্য জেলার বস্তিগুলো না হয় বাদই দিলাম। সাদা চামরাদের কথা
অনুযায়ী এই বস্তিগুলোতে এতদিন লাশের স্তুপ হয়ে যাওয়ার কথা, তাই নয় কি? যদি তবুও
আপনাদের আরও ভয় লাগে তবে আরেকটু তথ্য দেই, সাধারণ জ্বরে প্রতি মাসে বিশ্বের প্রায়
৩ লাখ, ম্যালেরিয়ায় প্রায় ৩ লাখ, এইচআইভি তে দেড় লাখ, অ্যালকোহল পানে প্রায় ২ লাখ
এবং ধুমপানে ৮ লাখ মানুষ মারা যায়; এগুলো ভয় লাগে না আপনাদের? মিডিয়ার তথ্য মতে,
করোনাভাইরাসে ৮ মাসে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫ লাখ।
কোভিড-১৯ ভাইরাস আমাদের যতটা না ক্ষতি করেছে;
তারচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে আতঙ্ক ও ভয় এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে। স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয় এবং কিছু চিকিৎসকের মাত্রারিক্ত দুর্নীতিতো আছেই। শিক্ষিত সমাজও আজ
সচেতন হবার নামে নামে অচেতন হয়ে আছে।
যার যেই রোগে মৃত্যু হয় অথবা ভুগে তার কাছে ওটাই
সবচেয়ে নিষ্ঠুর মনে হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখ জনক। আমরা সচেতন হবো
কিন্তু অন্যকে ভয় দেখিয়ে নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং সচেতনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ভীতি
দুর হোক। সবার সুস্থতা কামনা করি। আল্লাহপাক সবাইকে ভালো রাখুক।
তথ্য সূত্র:
1. World Health Organization (WHO)
2. World Meter Bangladesh
0 comments:
Post a Comment